Fruit treatment fruit, way to reduce fever quickly ! জ্বরের চিকিৎসায় ফল ! দ্রুত জ্বর কমানোর উপায় ! জ্বরে আপেল খাওয়া ! টি বি রোগে ফল

জ্বরের চিকিৎসায় ফল



সব অসুখেই ফল খাওয়া চলে । নিয়মিত ফল খেলে বহুদিন বেঁচে থাকা যায় ও অকালমৃত্যু ঘটে না । মুনি ঋষিরা ফল খেয়েই দীর্ঘজীবন লাভ করতেন । তবে এলোপাথাড়ি ভাবে ফল খেলে পরিণাম ভাল হবে না বরঞ্চ তা থেকে অন্য রোগের উৎপত্তি হতে পারে । যে কোনও লোকের শরীরের প্রয়োজন মতো ফল খাওয়া দরকার ।

জীবনে জ্বর হয়নি এমন মানুষ তো খুব কমই আছেন । জ্বরের সময় ফলের রস বিশেষ করে ডালিম বা কমলালেবুর রস খাওয়া ভাল । এই সব রস শরীর ঠাণ্ডা করে এবং খেতেও সুস্বাদু । যখন জ্বরে গা পুড়ে যায় এবং জিহ্বা শুকিয়ে যায় তখন প্রচুর পরিমাণে রস খাওয়ানো উচিত । পিত্তজ্বর ও ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে সাধারণত খুব তেষ্টা বেড়ে যায় । তখন কিছু খেতে ইচ্ছে করে না- মুখ তেতো লাগে । সেই সময় পানি খাওয়ার বদলে কমলালেবুর রস খাওয়াতে পারলে শরীর তাড়াতাড়ি চাঙ্গা হয়ে উঠবে ।


জ্বরে আপেল খাওয়া


জ্বরের সময় আপেল খাওয়ালে তাপ ( টেম্পারেচার ) কমে যাবে । তেড়ে জ্বর আসছে বলে মনে হলে রোগীর যদি তখন খাওয়ার মতো অবস্থা থাকে তাহলে একটা বা দুটো আপেল খেলে বেশি জ্বর এড়ানো যাবে । তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এতে যেন রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য না হয় । জ্বরের সময় যদি খুব তেষ্টা পায় ও গলা শুকিয়ে যায় তাহলে তাজা আপেলের রস ( সাত / আট চা - চামচ ) পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে উপকার হবে । আপেলের টুকরো সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন তার রস বের করে নিয়ে সমপরিমাণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে রোগীকে খাওয়ালে রোগীর প্রচণ্ড তেষ্টার ভাব কমবে ।

জ্বরে পাতিলেবু : গরম লেগে বা পেট গরম হয়ে জ্বর হলে এবং জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে পায়খানা বমি হলে পাতিলেবু খুব কাজ করে । খুব তেষ্টা পাওয়ার জন্যে যে কষ্ট হয় সেটারও উপশম হয় । একটা গোটা বা আধখানা পাতিলেবুর রস টিপে বের করে গ্লাসে চিনির সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োজন মতো পানি দিয়ে রোগীকে পান করতে দিন । এতে অস্বস্তি কমবে এবং পায়খানা ও বমি বন্ধ হবে । কাগজি লেবুও জ্বরে খুব নির্ভরযোগ্য । নিয়মিত খেলে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে । এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পাকা হলুদ রঙের কাগজি লেবুর কথাই বলা হচ্ছে কাঁচা সবুজ রঙের নয় । সদ্য গাছ থেকে পড়া সবুজ রঙের লেবু খেলে উলটো ফল হবে অর্থাৎ জ্বর হতে পারে ।


বছরে যে কোনও সময়ে জ্বরের জন্যে লেবুর পানীয় বা লেমোনেড ঃ পাঁচ ছয়টা পাতিলেবুর খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন । এবারে রস বের করে নিয়ে একটা চিনামাটির পাত্রে রাখুন । তিনশো গ্রাম ( প্রায় দু কাপ মতো ) ফুটন্ত পানি রসে ঢালুন । ঠাণ্ডা হলে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিয়ে রোগীকে বারে বারে একটু একটু করে খেতে দেবেন । এই পানীয়টি জ্বরের পক্ষে উপকারী এবং খেতেও সুস্বাদু । সব রকম জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ যেমন বমিভাব , তেষ্টা , অস্বস্তি সবই কমে । 

ম্যালেরিয়া জ্বরে ফলের চিকিৎসা ঃ ম্যালেরিয়া জ্বরের সাধারণত তিনটি ধাপ দেখা যায় । প্রথমে জ্বর আসে খুব শীত করে । গরম চাদর জড়াতে হয় । দ্বিতীয় অবস্থায় গা পুড়ে যাওয়ার মতো তাপমাত্রা উঠে যায় । তৃতীয় অবস্থায় রোগী ঘামতে থাকে এবং ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে- তাপ কমে যায় । সাধারণত কুইনাইনের চিকিৎসাই সকলের জানা আছে । কিন্তু ফলও খুব রোগ সারাতে পারে । একটি পাতিলেবু আধখানা করে কেটে তার উপরে গুঁড়োনো ফিটকারি বা চুন ছিটিয়ে আগুনে গরম করুন । তারপরে রসটা চুষে খান । সঙ্গে একটু গরম পানি খেতে হবে , এবং গায়ে গরম জামা দিয়ে রাখতে হবে । জ্বর আসবার তিন ঘণ্টা আগে এই লেবুর চিকিৎসা চালিয়ে যাবেন । ম্যালেরিয়ার জ্বর আসবার একটা নির্দিষ্ট সময় আছে- সেই সময় অনুসারে এই লেবুর চিকিৎসা করবেন । এতে বমি হওয়া ও জ্বর আসা আস্তে আস্তে বন্ধ হবে । ম্যালেরিয়া হলে অনেক সময় মুখে স্বাদ থাকে না , মুখ তেতো হয়ে যায় এবং রোগী প্রায় উপোস করেই থাকে । পাকস্থলীতে টক্সিক অ্যাসিড জমে বমি হয় । সে রকম অবস্থায় পাকা পেঁপে যতটা রোগী খেতে পারবে দিনে তিন চারবার খেতে দিতে হবে , এর সঙ্গে যদি দুধও খেতে পারে তাহলে আরও ভাল হয় । তিন চার দিন ধরে পর পর রোগীকে এইভাবে পাকা পেঁপে ও দুধ খাওয়ালে ম্যালেরিয়া সেরে যেতে পারে ।
গুঁড়ো কালো গোলমরিচ , লবণ ও শুকনো খোলায় সেঁকে নেওয়া ফিককারি প্রতিটি এক গ্রাম ( এক চিমটি ) করে নিয়ে একটা লেবু কেটে আধখানা করে তার ওপর ছড়িয়ে দিন । এই লেবুর টুকরো রোগীকে আধ ঘণ্টা অন্তর চুষতে দিন । ম্যালেরিয়া শ্রেণীর সব জ্বরই এতে কমে ।


জ্বরে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া : বেশি জ্বর হলে অনেক সময় খুব বেশি তেষ্টা পায় এবং অনবরত ঠোঁট শুকিয়ে যেতে থাকে । পাতিলেবুর রসে সমপরিমাণ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিয়ে ঠোঁটে মাঝে মাঝে লাগালে সঙ্গে সঙ্গে আরাম পাওয়া যাবে ।


টি বি রোগে ফল ঃ টি বি হল ক্ষয় রোগ । শরীরের নানান অংশেই টি বি - র আক্রমণ হয় । চিকিৎসায় দামি দামি খাবার যেমন মাছ মাংস দুধ ঘি ডাক্তারেরা ওষুধের সঙ্গে খেতে বলেন । কিন্তু যাঁরা অতটা খরচ করবার ক্ষমতা রাখেন না বা যাঁরা নিরামিষাশী তাঁদের জন্যে বিশেষ করে বলা যায় ফল খেয়েও এই রোগে আরোগ্য লাভ করা যেতে পারে । সঙ্গে অবশ্য দুধ খেতে হবে । টি বি রোগে আতা খুব উপকারী । অবশ্য হাকিমি বা কবিরাজি নানাবিধ ভষ্ম ও লবণ সহযোগে খেলে আরও বেশি ভাল ফল পাওয়া যাবে ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন