সজনে ডাঁটা,পাতা ও ফুল
পুষ্টিগুণ : সজনের পাতা , ফুল ও ডাঁটা -এই তিনটি অংশই হল পুষ্টিগুণে ভরপুর । পুষ্টিবিজ্ঞানীরা দেখেছেন প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী পাতা ও ডাঁটায় পাওয়া যায় ।
পুষ্টিগুণ, পাতায়, ডাঁটায়-
কার্বোহাইড্রেট ১৩.৪ গ্রাম- ৩.৭ গ্রাম) প্রোটিন ৬.৭ গ্রাম ২.৫ গ্রাম) ফ্যাট্ বা চর্বি ১.৭ গ্রাম ০.১ গ্রাম) ক্যালসিয়াম ৪৪০ মিগ্রা . ৩০ মিগ্রা) ফসফরাস ৭০ মিগ্রা . ১১০ মিগ্রা) লোহা ৭ মিগ্রা . ৩.৩ মিগ্রা) আঁশ ০.৯ গ্রাম ৪.৮ গ্রাম) আয়োডিন ৫.১ মাইক্রোগ্রাম,১.৮ মাইক্রোগ্রাম)
ভিটামিন ' এ' ১১৩০০ আই . ইউ, ১৮৪ আই . ইউ) ভিটামিন - ‘ সি’ ২২০ মিগ্রা, ১২০ মিগ্রা) নিকোটিনিক অ্যাসিড ০.৮ মিগ্রা . . ০.২ মিগ্রা .
উপকারিতা ঃ বাজারে আমরা চড়া দাম দিয়ে ডাঁটা কিনি অথচ অধিক পুষ্টিকর পাতার কথা কেউ মাথায় রাখি না । এই পাতা শাক হিসেবে গ্রাম গঞ্জের লোকেরা খায় । এটি ‘ গরিব লোকেদের কাছে ভিটামিন ’ বলে পরিচিত । পাতাশাক খেলে উচ্চ - রক্ত চাপ কমে যায় । প্রেসারের রোগীদের কাছে এটি হল মহৌষধ । ফাল্গুন - চৈত্র মাসে হাম - বসন্তের মতো রোগ দেখা যায় । আর ঠিক এসময়েই পাওয়া যায় সজনের ফুল ও ডাঁটা । কবিরাজ মহাশয়েরা বলেন সজনের ফুল সব্জি হিসেবে খেলে হাম - বসন্ত হবে না । আবার ইউনানী ডাক্তাররা বলেন সজনে ফুল সর্দি - কাশি , প্লীহা , যকৃতের দোষ এবং : ক্রিমির মতো রোগে টনিকের মতো কাজ করে ।
পাতাশাক খেলে সর্দি - কাশি জ্বর সারে খাবারে অরুচি দূর হয় এবং ক্ষিদে বাড়ায় । আমাশয় , বাত এবং পেটের গণ্ডগোলে পাতাশাকের ঝোল বেশ কার্যকারী । ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ পাতা ও ডাঁটা খেলে শিশুদের হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত হয় । সজনের পাতায় প্রচুর পরিমাণে লোহা থাকায় শিশু ও গর্ভবতী মায়ের দেহে লোহার ঘাটতি মেটায় এবং রক্তাল্পতার মতো সমস্যায় দারুণ কাজ দেয় । এজন্য নিয়মিত আহারে সজনের শাক রাখুন ।
ধনে পাতায় রোগ সারান
ধনেপাতা হল শীতকালীন সব্জি । এর পাতা , কচিডাল এমনকি গোটাগাছ ( চারা অবস্থায় ) সব্জি হিসেবে ব্যবহার করা হয় । শীতের রান্না ধনেপাতা ছাড়া চিন্তা করা যায় না । এর বিজ্ঞানসম্মত নাম হল- করিয়েনড্রাম স্যাটাইভাম ।
পুষ্টিগুণ : পুষ্টিগুণ হিসেবে ধনেপাতার মূল্য নেহাত কম নয় । এর প্রতি ১০০ গ্রাম পাতায় আছে | কার্বোহাইড্রেট— ৬.৫ গ্রাম , ফ্যাট- ০.৬ গ্রাম) রিবোফ্লাবিন ৬০ মিগ্রা) ফসফরাস ৬০ মিগ্রা) প্রোটিন ৩.৩ গ্রাম , লোহা- ১০ মিগ্রা) ক্যালসিয়াম ১৪০ মিগ্রা) ভিটামিন - ' সি' ১৩৫ মিগ্রা) ভিটামিন - ' এ' ১০৪৬০ আই ইউ) নিকোটিনিক অ্যাসিড-০.৮ মিগ্রা
উপকারিতা ঃ * ধনে পাতার রস খেলে অর্শ থেকে রক্ত পড়া উপশম হয় ।
* ধনে পাতা বেটে সেই রস পরিষ্কার কাপড়ে ছেঁকে নিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে সকাল ও সন্ধ্যেবেলা চোখে দিলে চোখের ব্যাথায় উপকার হয় ।
* ধনে পাতার রস বায়ু নাশ করে ও খিদে বাড়িয়ে দেয় সেই জন্যে এই পাতা খেলে শরীর ঝরঝরে বা তরতাজা থাকে ।
★ বসন্ত রোগে ধনে পাতার রস চোখে দিলে চোখে বসন্তের গুটি বেরোয় না ।
* ধনে পাতা চিবিয়ে সেই পাতা দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের মাড়ি দৃঢ় বা মজবুত হয় । তাঁদের ঢিলে মাড়ি শক্ত হয়ে যায় এবং রক্তপড়া বন্ধ হয় । - , সতর্কতা – রান্নায় অত্যাধিক ধনে পাতার ব্যবহার ভাল নয় । বেশী ধনে পতার রস পেটে গেলে রতিশক্তি কমে যায় , দৃষ্টিশক্তি লোপ পায় , মাথা ঘুরতে থাকে , মনে চাঞ্চল্য উপস্থিত হয় , এবং হাত - পা ঠাণ্ডা হয়ে যায় । অবশ্য সাধারণত যে পরিমাণে ধনে পাতা খাওয়া হয় তাতে এসব অসুখের আশঙ্কা থাকে না ।