গা,হাত,পা,জ্বালা করার কারণ ও প্রতিকার, হৃদরোগের চিকিৎসা, অশ্ব রোগের ঘরোয়া টোটকা,What to do in case of sore throat - Home Remedies for Heart Disease

স্বরভঙ্গ ( গলাভাঙ্গা )

লক্ষণ ঃ ঠাণ্ডা লাগা , অতিরিক্ত চিৎকার করা প্রভৃতি কারণে গলা ভাঙ্গে ।

কিচিৎসা ঃ বচ ৫ গ্রাম , যষ্ঠিমধু ৫ গ্রাম , গোলমরিচ ৫ গ্রাম , কাবাব চিনি ৫ গ্রাম এবং সোহাগ ৫ গ্রাম চূর্ণ করে মিশ্রণ একটা শিশিতে ভরে রাখতে হবে । দিনে ৫/৬ বার অল্প পরিমাণ মুখে ফেলে চুষে খেতে হবে । এরপর সামান্য গরম পানি খেতে হবে ।

পথ্য : টক জাতীয় এবং ঠাণ্ডা জাতীয় খাদ্য খাওয়া নিষেধ ।

হৃদরোগ

লক্ষণ : অতিরিক্ত ব্যায়াম , বয়স বৃদ্ধি , মানসিক উত্তেজনা অজীর্ণতা পায়ুবিক দুর্বলতা , অতিরিক্ত পরিশ্রম , অতিরিক্ত ধুমপান প্রভৃতি কারণে হৃদরোগ হয় । বুক ধড়ফড় করা , বুক ব্যথা , শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি এই রোগের লক্ষণ ।

চিকিৎসা ঃ অর্জুন গাছের ছাল চূর্ণ করে দৈনিক দুবেলা গরম ভাতের সাথে ২ চামচ করে , ঘি দিয়ে ( লবন ব্যতিত ) খাইতে হইবে বা গরম দুধের সাথে দু ' চামচ করে দৈনিক দুই বার খাইতে হবে এভাবে ১ মাস । এছাড়া কোষ্ঠ - কাঠিন্যের জন্য নির্দিষ্ট ঔষধ খেতে হবে ।

পথ্য ঃ ভিটামিনযুক্ত , পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে ।

হিকা

লক্ষণঃ অজীর্ণতা , ঠান্ডা লাগা প্রভৃতি ঝারণে হেঁচকি ওঠাকে হিক্কা বলে ।

চিকিৎসা ঃ ১০ গ্রাম শুকনো আমলকী , ১০ গ্রাম পিপুল , ১০ গ্রাম ওঁঠ , ১০ গ্রাম মিছরী একত্রে হামানদিস্তায় চূর্ণ করে একটা শিখিতে রাখতে হবে । এই চূর্ণ ১ চামচ করে দৈনিক সকালে ও সন্ধ্যায় খেলে আরামবোধ হবে ।

গা - হাত - পা - জ্বালা

লক্ষণঃ পিত্ত গরম হলে ঊষ্ণ পিত্তরস রক্তের সাথে মিশে গিয়ে এ রোগের জন্ম দেয় ।

চিকিৎসাঃ রাত্রিবেলা কাচের গ্লাসের ১ গ্লাস গরম পানিতে ৫.৬ টুকরো শুকনো আমলকী , ৫ আম ধনে , ৫ গ্রাম মৌরী ভিজিয়ে ঢেকে রেখে দিতে হবে । সকালে ঐ পানি ছেঁকে নিয়ে খালি পেটে খেতে হবে । এভাবে ৭ দিন যেতে হবে ।

পণ্য  ঃ মিছরির সরবত ও আখের রস খেতে হবে ।

শ্বেতী

লক্ষণঃ যকৃতের ক্রিয়ার ব্যতিক্রমের ফলে এই রোগ হয় ।

চিকিৎসা : ( ১ ) ২৫ গ্রাম চালমুগরা বীজ এবং ২৫ গ্রাম বুচকীদানা বাটিয়া নিয়ে ছোট ছোট বড়ি বানিয়ে রেখে দিতে হবে । এই বড়ি দৈনিক সকালে ও বিকালে ২ টি করে খেতে হবে । ( ২ ) ১০ গ্রাম ক্যাক্টর অয়েল এবং ১০ গ্রাম শ্যাওড়া বীজের তেল এক সাথে মিশায়ে নিয়ে পরপর কয়েক দিন শ্বেতী স্থানে লাগাতে হবে ।

পথ্য ঃ গুরুপাক খাদ্য , ভাঁজা , ঝাল , টক খাওয়া নিষিদ্ধ । দৈনিক তেতো খেতে হবে ।

অশ্ব

লক্ষণ ঃ মলদ্বারের ভিতরে ও বাইরে শিরা স্ফীত ও বর্ধিত হয়ে মটরের মত যে ' বলি ' উৎপন্ন হয় তাকেই বলা হয় অর্শ । কখনও একটি বলি আবার কখনো বা অনেকগুলি বলি আঙ্গুরের থোকার আকারে দেখা যায় । বলি মলদ্বারের বাইরে থাকলে তাকে বহিবলি এবং মলদ্বারের ভেতরে থাকলে তাকে অন্তর্বলি বলে থাকে । আবার যে বলি হতে রক্ত পড়ে না তাহাকে অন্ধবলি বলে । রক্তস্রাব , মলদ্বারের নিকট জ্বালা , বেদনা ও কুটকুট করা প্রভৃতি এ রোগের প্রধান লক্ষণ । যকৃতের দোষ , কোষ্ঠকাঠিন্য , নেশা , করা , অধিক পরিমাণে গরম মশলদিযুক্ত উত্তেজক দ্রব্য ভোজন প্রভৃতি কারণে এ রোগ হয় ।

চিকিৎসা : অভয়ারিষ্ট এ রোগের ভাল ঔষধ । যেকোন ভাল কবিরাজী দোকানে পাওয়া যায় । এছাড়া গাঁদাল পাতার রস ২ চামচ , দুর্বার রস ৪ চামচ , কাঁচা হলুদের রস ২ চামচ , হরিতকি চূর্ণ ১ চামচ একত্রে মিশিয়ে রোজ খেতে হবে দিনে দু'বার করে ১ মাস ।

পথ্য   ঃ পুষ্টিকর অথচ লঘু পথ্য দিতে হবে । লঙ্কা , গরম মশলা , ভাজা পোড়া বেশী , তেল , ঘি উত্তেজক দ্রব্য খাওয়া নিষেধ । পেঁপে , ওল , আখ , মাখন , পুরনো চালের ভাত , ডুমুর , কচু প্রভৃতি খাওয়া উচিত । মল - মূত্রের বেগ আটকে রাখা , উবু হয়ে বসা , ঘোড়ায় চড়া , রাতজাগা , অতিরিক্ত স্ত্রীসহবাস , উপবাস করা উচিত নয় । কোঁথ দিয়ে মলত্যাগ করা উচিত নয় । ডাবের পানি , ঠাণ্ডা পানি , রাত্রে শোবার সময় গরম পানি খাওয়া উপকারী । কালমেঘ , উচ্ছে , হেলেঞ্জা , প্রভৃতি খাওয়া ভালো । মাঝে মাঝে কাঁচাবেল পোড়া ও ইসগুলের ভূষি খাওয়া উচিত । মলদ্বার ও বলি দৈনিক ঠাণ্ডা পানিতে ধোওয়া ভাল ।

ভগন্দর

লক্ষণ ঃ এ রোগে মলদ্বারের চারধারে ক্ষত হয় । এ ক্ষত সহজে শুকায় না । এইজন্য প্রায়ই নালী বা শোধ হয় । প্রথমে মলদ্বারের পাশে একটি গোটা বা ফুঙ্কুরি মত হয় । সামান্য চুলকায় । কয়েকদিন পর ব্যথা , ফোলা দেখা দেয় এবং আক্রান্ত স্থান পেঁকে যায় ও পুঁজ জন্মায় । খুবই যন্ত্রণা অনুভূত হয় । চিকিৎসাঃ আক্রান্ত জায়গা নিমপাতা , সিদ্ধ দিয়ে ধুয়ে ফেললে যন্ত্রণার উপশম হয় । এ রোগের চিকিৎসা যে কোন ভাল করিবরাজের দ্বারা করানো উচিত ।

পথ্য : লঘু অথচ পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া উচিত । মাছ , মাংস এবং সর্বপ্রকার গুরুপাক দ্রব্য বা খাদ্য মশলা খাওয়া ক্ষতিকর । বিঃদ্রঃ এই রোগের চাঁদসী - চিকিৎসা ফলপ্রদ ।

নালী ঘা

লক্ষণ  ঃ আঘাত , ফোঁড়া বা অন্য কোন কারণে কিছুটা জায়গা ফুলে ওঠে , পাকে , পুজ হয় । এ পুঁজ সময় মতো বের না করে দিলে মাংসের ভিতরে ক্ষত হয়ে গর্ভের মতো হয় । একেই নালী ঘা বলে থাকে । চিকিৎসা ও প্রথমে নিমণ্যতা নিদ্ধ করা পানি দিয়ে আক্রান্ত জায়গায় সেঁক দিতে হবে । কিছুক্ষণ সেঁক দিলে জায়ণটা তুলতুলে হয়ে যাবে । এবার চাপ দিয়ে ভেতরের পুজবস্তু বের করে দিতে হবে । এবার নীচের ফর্মুলার মল তৈরী করে লাগাতে হবে । ৫০ গ্রাম নারকেল তেল , নিমপাতার রস ২৫ গ্রাম , গন্ধক চূর্ণ ২ গাম , তুঁতে ৫ মাম , মুদ্রাশৰে চূর্ণ ১ গ্রাম , গাজাদৃণ ১ গ্রাম , আপাং পাতার রস ২৫ গ্রাম এক সাথে জাল দিয়ে ঘন করে নিতে হবে । এটাই মলমের মত হবে ।

পণ্য ঃ লঘু অথচ পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া উচিত । উৎসব দ্রব্য , মাংস , ডিম , মশলা , টক্ , খাওয়া নিষেধ । 

হার্নিয়া

লক্ষণ ঃ এ রোগে অস্ত্র ( পেটের নাড়িভুড়ি ) কুঁচকিতে , নাভিতে বা অন্ডকোষে প্রবেশ করে । জ্বর , বমি , হেঁচকি , পেটফোলা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয় । ক্রমশঃ অস্ত্র পচিয়া মৃত্যু ঘটতে পারে । ভারী জিনিস তোলা , কোষ্টকাঠিন্য , অধিক পরিশ্রম করা , মল - মূত্র ত্যাগের সময় বেশি কোঁথা দেওয়া , পেটে বেশী চাপ পড়া বা বার্ধক্যে শরীর শিথিল হওয়া প্রভৃতি কারণে এ রোগ হয় ।

চিকিৎসাঃ রোগীকে চিৎ করে শুয়ায়ে পা দু'টো উঁচু করে ধরলে অস্ত্র আপনা আপনি যথাস্থানে ঢুকে যায় । ব্যথার স্থানে গরম পানির সেঁক দিলে আরাম অনুভূত হয় । সঠিক চিকিৎসক দেখায়ে কটিবন্ধনী ব্যবহার করা উচিত ।

পথ্য ঃ মিছরীর সরবত , হাল্কা ও পুষ্টি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন