পিপাসা রোগ
লক্ষণঃ যে কোন রাগের আক্রমণে শরীরে পানিশূণ্যতা দেখা দিলে ঘন ঘন পানি পিপাসা পাওয়া এ রোগের লক্ষণ ।
চিকিৎসা : ৫০০ গ্রাম গরম পানিতে ৫ গ্রাম সৌরী এবং ৫ গ্রাম ধনে ভিজিয়ে ঢেকে রাখতে হবে । এই পানি ঠাণ্ডা করে হেঁকে দিয়ে অল্প অল্প করে রোগীকে খাওয়াতে হবে পিপাসার সময় । এ ছাড়া মূল রোগের চিকিৎসা করতে হবে ।
পথ্য ঃ রোগ অনুযায়ী পথ্য রোগীকে দিতে হবে ।
প্রস্রাবে জ্বালা ও যন্ত্রণা
লক্ষণ ঃ রাতজাগা , মদ্যপান , উগ্র ঔষধের অপব্যবহার , প্রভৃতি কারণে এই রোগ হয় । জ্বর , বমি , অল্প প্রস্রাব , প্রসাবের সময় জ্বালা ও বেদন , প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত , কোমরে ও শিরদাড়ায় বেদনা , অন্ডকোষ লাল হওয়া রোগের লক্ষণ ।
চিকিৎসা ঃ কাঁচা আমলকীর রস ২ চামচ , কাঁচা হলুদের রস ১ চামচ এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে সকালে খালিপেটে । রোজ একবার করে পরপর ১০ দিন ।
পথ্য ঃ রোগের প্রবল অবস্থায় , ঘোল , সাগু , বালি প্রভৃতি দিতে হবে । রোগের সর্ব অবস্থায় মিছরীর সরবত উপকারী । এই রোগে বিভ্রাম একান্ত প্রয়োজন । কোমরে সেঁক দিলে উপকার হয় ।
মৃত্রপাথরী
লক্ষণ ও খাদ্য পরিপাক ও পরিশোষণ কার্যের ব্যাঘাত ঘটলে নবগছি বা কিডনিতে , মূত্রাশয়ে বা ব্লাডারে স্টোন বা পাথর জন্মে । এ পাথর বিভিন্ন আকারের হয় ।
চিকিৎসাঃ পাথর কুঁচি পাতার রস ৩/৪ চামচ করে প্রতিদিন সকালে খেতে হবে । প্রস্রাবে রক্ত থাকলে ২ চামচ তুলসী পাতার রস এবং ২ চামচ দুর্বার রস মিশিয়ে খেতে হবে ।
পথ্য ঃ মিছরীর সরবত , ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার খেতে হবে ।
তক্রক্ষরণ
লক্ষণ ঃ ক্রিমি , অর্শ , অশ্বারোহন , হস্তমৈথুন , গনোরিয়া প্রভৃতি কারণে এই রোগ জনে । শ্রীলোক দর্শন বা স্পর্শন , মলত্যাগকালে কোথ দিলে , অল্প উত্তেজনায় বীর্ষক্মখলন , স্ফূর্তিহীনতা , শারিরীক দুর্বলতা , স্মৃতিশক্তির হ্রাস , সলজ্জ ভাব , কোষ্ঠকাঠিন্য , শিরপীড়া , চোখ বসে যাওয়া , চোখের কোনে কালি পড়া , স্বপ্ন দোষ প্রভৃতি এই রোগের প্রধান লক্ষণ । এই রোগ হতে ধ্বজভঙ্গ , যাকাশ প্রভৃতি রোগ হতে পারে ।
চিকিৎসা ঃ শিমূল মুল চুর্ণ ২ গ্রাম , অশ্বগন্ধা চূর্ণ ২ গ্রাম , কারাবচিনি চূর্ণ ২ গ্রাম ১ চামচ চিনি এবং ২০০ গ্রাম গরম দুধ একত্রে ভালো করে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে বা দুপুরে একবার খেতে হবে ।
পথ্য : লঘু অথচ পুষ্টিক , খাদ্য গ্রহণ করা উচিত । উত্তেজক দ্রব্য পান বা ভোল , দিবানিদ্রা , বেশী নিদ্ৰা , কুসংসর্গ , হস্তমৈথুন বর্জনীয় ।
একশিরা রোগ
লক্ষণঃ এই রোগে অণ্ডকোষ পানি সঞ্চয় হয় । পূর্ণিমা বা অন্যবস্যায় এ রোগ বাড়তে থাকে ।
চিকিৎসা ঃ এ রোগের চিকিৎসা নিজে না করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ । অভিজ্ঞ চিকিৎসক দেখান উচিত ।
ধ্বজভঙ্গ
লক্ষণ ঃ পুরুষাঙ্গের শক্তিহীনতার নাম ধ্বজভঙ্গ । হস্তমৈথুন , অতিরিক্ত ব্রী অধিক তক্রক্ষরণ , আঘাত লাগা প্রভৃতি কারণে এই রোগ জন্মায় ।
চিকিৎসা ঃ ১ চামচ অশ্বগন্ধাচূর্ণ , ১ চামচ শিমূলমূল চূর্ণ , ১ চামচ কাবার চিনি চর্ণ , ১ চামচ তালমূলী চূর্ণ , ১ চামচ মধু , ২৫০ গ্রাম দুধ একত্রে মিশিয়ে খেতে হবে রাত্রি ১ বার করে ১ মাস ।
পথ্য ঃ পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া উচিত । শরীর পরিষ্কার - পরিচ্ছা করে মন পবিত্র রাখা অবশ্যই দরকার । আবার দৈনিক গোসল করা উচিত ।
সিফিলিস
লক্ষণ ঃ সিফিলিসে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সহবাস করলে বা পিতা - পুত্রের থেকেও সন্তানের এ রোগ হতে পারে । এ রোগের জীবাণু শরীরে ঢোকার ১ সপ্তাহের মধ্যেই লিঙ্গের আগায় একটি ফুরি দেখা দেয় । ধীরে ধীরে চুলকাতে থাকে এবং বেদনাযুক্ত হয় । ৩/৪ দিনের মাঝেই ঐ ফুস্কুরি পারিপূর্ণ ফোস্কার মত হয় । পরে ঐ ফুণ্ডুরি গলে গিয়ে ক্ষতের মতো হয় এবং ওর হতে পুঁজ বাহির হতে থাকে । এই রোগ খুব খারাপ এবং ভয়াবহ ।
চিকিৎসা ঃ নিমপাতা সিদ্ধ করা গরম পানিতে প্রতিদিন আক্রান্ত স্থান ধুয়ে ফেলতে হবে । এবার ২ গ্রাম রস কর্পূর ৫০ গ্রাম তেলের সঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে হবে । প্রতিদিন দুবার করে ১৫ দিন ।
পথ্য ঃ লঘু অথচ পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া উচিত । ডিম , মাংস , মদ খাওয়া নিষেধ । বেশি বেশি পরিশ্রম করা উচিত নয় ।
গনোরিয়া
লক্ষণ ঃ গনোরিয়া রোগগ্রস্থ স্ত্রী বা পুরুষ সহবাস করলে এ রোগ হয় । জননেন্দ্রিয়ের যন্ত্রণা , সেখান হতে পুঁজ পড়া , মূত্রনালি সুড়সুড় ও জ্বালা করা , সূত্রত্যাগকালে অসহ্য যন্ত্রণা প্রভৃতি এ রোগের লক্ষণ । চিকিৎসা ঃ দু'চামচ গুলঞ্চের রস , ২ গ্রাম কাবার চিনি চূর্ণ , ২০০ গ্রামগরম দুধ এক সাথে মিশিয়ে খেতে হবে প্রতিদিন । ১ মাস ।
পথ্য ঃ ডিম , মাংস , মাদক দ্রব্য , শঙ্কা , পেঁয়াজ , উত্তেজক দ্রব্য ভোজন নিষেধ । দুধ , সরবত ইত্যাদি উপকারী ।