Sexual health disorders in women, physical weakness during pregnancy ! মহিলাদের যৌন স্বাস্থ্য রোগ ! গর্ভাবস্থায় শারীরিক দুর্বলতা ! অনিয়মিত মাসিক

মহিলাদের যৌন স্বাস্থ্য রোগ

যে সব মহিলারা কাজকর্ম বিশেষ করেন না এবং আরামে থাকেন তাঁদের হজম শক্তি কমে যায় এবং তাঁদের লিভার মন্থরগতিতে কাজ করে । এর থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং পাকস্থলীতে হজম না হওয়া পদার্থ জমতে থাকে । এই সব পদার্থের পচনের ফলে শরীরে নানা রকম ব্যথা যন্ত্রণা শুরু হয় , পেট ভার হয় , মাথা ব্যথা করে সব সময়ে একটা ঝিমুনিভাব আসে । যাঁরা এই সব ধরণের অসুখে ভুগছেন তাঁরা যদি কম করে এক সপ্তাহ ফলের চিকিৎসা করে দেখেন এবং তার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি খান তাহলে তাঁদের বদহজম এবং তৎসংক্রান্ত যে অসুখ সেরে যাবে এবং পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে । এ ক্ষেত্রে যে ফল সহজে পাওয়া যায় এবং খেলে সহ্য হয় সেই ফলই খাবেন ।


অনিয়মিত মাসিক ঃ যে সব মহিলাদের নিয়মিত মাসিক হয় না তাঁরা আঙুরের রস খাবেন- এটা টনিক হিসেবেও কাজ করবে এবং এতে মাসিকও নিয়মিত হবে ।


গর্ভবতী মহিলা ঃ গর্ভবতী মহিলারা যদি নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণে আঙুরের রস খান তাহলে তাঁদের বমিভাব , মাথা ঘোরা , মাথা ধরা কমবে । কোষ্ঠকাঠিন্য হবে না । তাঁরা সুস্থ সবল শিশু প্রসব করবেন এবং প্রসবের সময় কোনও অসুবিধা হবে না । আঙুরের রসের সঙ্গে যদি কিসমিস মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যাবে । গর্ভের নয় মাসের শুরু থেকে প্রসবের দিন পর্যন্ত যদি প্রতিদিন সকালবেলা ১ চা চামচ করে বাদামের ( কাশ্মিরি ) তেল বা পানি ভেজানো আট দশটি বাদাম ( কাশ্মিরি ) খোসা ছাড়িয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন তাহলে প্রসব - বেদনা একেবারেই হবে না ।


প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলা ঃ মহিলারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে বেশি ভোগেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্যই যত স্ত্রীরোগের উৎপত্তির কারণ । মহিলারা স্বভাবতই একটু কোমল প্রকৃতির । প্রকৃতিই মানুষকে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচায় । ফল প্রকৃতিরই দান । নিয়মিত ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে নানাবিধ স্ত্রীরোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । তার প্রথম ধাপই হল প্রচুর ফল খেয়ে বারোমেসে কোষ্ঠকাঠিন্য কমানো এবং পেট পরিষ্কার রাখা ।


কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা : প্রতিদিন দশ থেকে বারোটা করে কিমমিস দুধে ফুটিয়ে নিতে হবে তারপরে দুধের সঙ্গে কিসমিসগুলো খেয়ে নিন । দেখে নিতে হবে কিসমিসের রঙ যেন কালো হয় কিন্তু কিসমিসগুলো যেন পচা না হয় । | খাবারের তালিকায় বেশির ভাগ যেন শাক সবজিই থাকে- ভাত ডাল কম খেলেই ভাল । আমলকির মোরব্বা এবং পেঁপের তরকারি খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে । পেয়ারাও প্রচুর খাবেন । শাক সবজির মধ্যে বাঁধাকপি বেশি করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় । পাকা আঙুর আর পাকা পেঁপে যেন খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন থাকে । শীতের সময় শালগম পাওয়া যায়- শালগমের তরকারি খেলেও ভাল ফল পাওয়া যাবে । রাতের খাবারের তালিকা সেদ্ধ দালিয়া ( গমের দানা ছোট ছোট করে ভাঙা ) , পালঙ শাকের তরকারি , নাশপাতি ও পাকা ডুমুরের ( আঞ্জির ) স্যালাড ( চাট ) খাবেন । প্রতি রাতে দুটো করে পাকা কলা ও একটি পাকা পেয়ারা খেতে পারলে আরও ভাল । শুধু কলা যেন খাবেন না- তাতে কোষ্ঠকাঠিন্য আরও বাড়বে । আঙুর খাওয়ার অভ্যেস করতে পারলে খুবই ভাল- তা যদি না পারা যায় তাহলে তার বদলে নাশপাতি , আতা , পেয়ারা , কলা , পাকা পেঁপে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমবে এবং অনেক স্ত্রীরোগের হাত থেকে বাঁচা যাবে ।


লিউকোরিয়া ( শ্বেত প্রদর ) রোগে বেল ও অন্যান্য ফল ঃ মেয়েরা অনেকেই এই অসুখে ভোগেন । এতে শরীর দুর্বল হয়ে যায় । এই অসুখের প্রধানত দুটি কারণ আছে তার মধ্যে একটি হল নিয়মিত খাওয়া - দাওয়া না করা এবং আরেকটি হল অসংযত জীবনযাপন করা । কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারলে ও সংযত জীবনযাপন করতে পারলে এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । ষাট গ্রাম মতো ( চার টেবিল চামচ শাঁস ) পাকা বেল দিনে তিন থেকে চারবার খাওয়ার অভ্যেস করতে পারলে শ্বেত - স্রাব অব্যর্থ ভাবে সেরে যায় । এই বেল যে কদিন খাবেন সে কদিন ডাল - ভাত না খাওয়াই ভাল । আপেলের জ্যাম , আমলকির মোরব্বা নিয়মিত খেলেও এই রোগ সেরে যেতে পারে । সকালে বিকালে এক টেবিল চামচ করে আঙুরের রস খেলেও উপকার পাওয়া যাবে । গায়ের রঙের ফ্যাকাসে ভাব কমতে পারে এবং জরায়ুর দ্বার থেকে অনবরত জলীয় পদার্থ বেরোনো এতে কমে যাবে ।


হিস্টিরিয়া রোগের চিকিৎসা


হিস্টিরিয়া ঃ মাসিকের গণ্ডগোল হলে অনেক সময় হিস্টিরিয়া রোগ দেখা দেয় । সে ক্ষেত্রে আঙুরের রসের চিকিৎসায় বিশেষ উপকার পাওয়া যাবে । অনিয়মিত মাসিক ও বহুদিন ধরে মাসিক চলতে থাকা : বেশি দিন ধরে মাসিক চলতে থাকলে শরীরের অনেক রক্ত বেরিয়ে যায় এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে । নানাবিধ চিকিৎসায় যদি এ অসুখ না সারে তাহলে ফলের চিকিৎসা করে দেখুন ।


পাকা কলার চিকিৎসা : সারা দিনে ছয় সাতটা পাকা কলা ( যাঁর যেমন সহ্য হবে ) ছোট এলাচের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে । এই চিকিৎসা চলার সময়ে খাওয়া - দাওয়া একেবারে হালকা ধরনের করতে হবে । ভাজাভুজি একেবারেই খাবেন না । রান্নায় ঝাল - মশলাও বাদ দেবেন । নারিকেলের পানি , আখের রস , ফলসার রস , এ ছাড়া খেজুর , কাঁচা পানিফল , কিসমিস , আঙুর খেতে পারলে এইসব অসুখের উপশম হয় ।


গর্ভাবস্থায় দুর্বলতা : অনেকে গর্ভবতী হওয়ার পর খুবই দুর্বলতা বোধ করেন এবং তার সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গও দেখা দেয় । যাঁরা শারীরিক পরিশ্রম করেন তাঁদের কিন্তু এই দুর্বলতার ভাবটা অপেক্ষাকৃত কমই থাকে । ওষুধপত্রে যদি কাজ না হয় তাহলে দুর্বলতা দূর করতে যতটা পরিমাণে সহ্য হবে দুধ এবং ফল খাবেন এবং সংযতভাবে জীবনযাপন করবেন । মাখনের সঙ্গে মিশ্রি মিশিয়ে যতটা সহ্য হয় ততটা পরিমাণে খাবেন । এতে উপকার পাওয়া যায় । দুধ এবং পাকা কলা উপকার দেবে দুধের সঙ্গে একটু চিনি মিশিয়ে খাবেন । যাঁদের পক্ষে সম্ভব তাঁরা কিসমিস বা তাজা আঙুর খাবেন তা ছাড়া আপেল , আমলকি খেলেও দুর্বলতা কমে । প্রসবের পর নানাবিধ উপসর্গ দেখা যায় । শরীরের দুর্বলতা বেশি হলে একটু আদার রস সামান্য গরম করে মধু মিশিয়ে খেলে ভাল হয় । কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সেই রকম খাবার খেতে হবে । দুধে দশ থেকে বারোটা কিসমিস ফুটিয়ে একটা একটা করে খেয়ে দুধটা পান করে নেবেন । যদি সহ্য হয় তাহলে দিনে দুবার করে খেতে পারলে ভাল হয় ।


হার্টের অসুখে ফল : বিশেষ করে বিত্তবান বাড়ির মেয়েদের হার্টের অসুখের কথা বেশি শোন যায় । কারণ তাঁরা বেশি মশলাপতি দেওয়া ও ঘি দেওয়া দামি দামি খাবার খান । অনেকে আবার অনিয়মিত জীবনযাপনও করেন । তাঁদের বুক ধরফড়ানি , বুকে ব্যথা এই সব অসুখ প্রায়ই হয় । ওষুধপত্রে কাজ না হলে ফল খাওয়ার অভ্যেস করুন । এতে হার্টের উন্নতি হবে । নারিকেল , নাশপাতি , আপেল , পানিফল , আমলকির মোরব্বা , ফলসা ইত্যাদি নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন । নারিকেলের পানি কিংবা ডাবও হার্টের অসুখে খুব উপকারী ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন